1. almoazzintv@gmail.com : Moniruzzaman Monnu : Moniruzzaman Monnu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:২২ অপরাহ্ন

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেলেন চা দোকানি স্মৃতি

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২২৭ Time View
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
দরিদ্র পরিবারে সংসার চালাতে চায়ের দোকানে কাজ করার পাশাপাশি পড়াশোনা করে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে স্মৃতি আক্তার নামে বোয়ালমারীর ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের এক ছাত্রী। তার এ সাফল্যে অনেকেই তার বাড়িতে যেয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এসএসসিতে তেমন একটা ভালো ফলাফল করতে না পেরে এবার সে কঠিন সংকল্প করেই ছিনিয়ে নিয়েছে কাঙ্ক্ষিত এ সাফল্য।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় বোয়ালমারীর কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের ছাত্রী হিসেবে পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নিয়ে এ ফলাফল অর্জন করে সে।
স্মৃতি আক্তারের পিতা মো. হারুন শেখ। পেশায় তিনি একজন তাল গাছের কারবারি। তারা দুই বোন এক ভাই। বড় বোন মনিকা আক্তারও দারিদ্রতার সাথে সংগ্রামের পাশাপাশি ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী কলেজ থেকে অনার্স পাশ করে হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ময়না বাজারের পাশেই তাদের বাড়ি। আর বাড়ির পাশেই ছোট একটি মুদি দোকানের সাথে আয় বাড়ানোর উপায় হিসেবে চা বিক্রির একটা দোকান। স্মৃতি আর তার বোন মনিকা দুজনে পালাক্রমে নিজেরাই এই দোকান চালান।
স্মৃতির মা আসমা আক্তার বলেন, তার শ্বশুর প্রায় ৩০ বছর আগে বাড়ির পাশে মুদি দোকান করতেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে তার স্বামী হারুন শেখ দোকান শুরু করেন। ছোটবেলা থেকে তাকে সহায়তা করতো মেয়েরা। তবে আয় উপার্জন তেমন একটা না হওয়ায় এ দোকান ছেড়ে তিনি তাল গাছ বেচাকেনার ব্যবসা শুরু করেন। এরপর পরিবারের অভাব ঘুচাতে পিতার বদলে দুই মেয়ে দোকানের ভার গ্রহণ করেন। আস্তে আস্তে দোকানের একপাশে গড়ে তুলেন ছোট একটি চায়ের স্টল।
স্মৃতি আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, পরিবারের আয়ের সংস্থানের পাশাপাশি পড়াশোনার খরচ জোগানোর জন্য তারা দুই বোন বাড়ির পাশে মুদি দোকানে চা বিক্রির করেন। প্রথম প্রথম একটু সমস্যা হলেও এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে। সারাদিনে চা বিক্রির পাশাপাশি সময় পেলেই পড়াশোনার কাজ সেরে নিই। পাশাপাশি রাতে যেটুকু সময় পাই কাজে লাগাই। এভাবেই আমরা দুই বোন পড়াশোনা করে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার পথ বেছে নিই। তবে অর্থের অভাবে ইচ্ছে থাকলেও কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারিনা।
স্মৃতির ইচ্ছে ছিলো সে চিকিৎসক হবে। তবে মানবিক বিভাগ থেকে সে ডাক্তারিতে ভর্তি হতে পারবেনা। তাই সে আরো উচ্চ শিক্ষা লাভ করে এমন একটি পেশায় নিবেদিত হতে চায় যেখানে থেকে সে মানুষের সেবা করতে পারবে।
তাদের পিতা হারুন শেখ বলেন, মেয়েদের এ সাফল্যে আমরা খুবই আনন্দিত। এর আগে তার আরেক মেয়ে অনার্স পাশ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন। এই টাকা বিরাট কাজে লাগে তাদের পড়াশোনার এ সাফল্যে। তিনি বলেন, তার মেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভে বড় বাধা আর্থিক সংকট। এই বাঁধা না থাকলে তারা আরো ভালো ফলাফল করতে পারতো।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. বাচ্চু শেখ বলেন, মনিকা ও স্মৃতির এই সাফল্যের খবর জেনে তিনি তাদের বাড়িতে যেয়ে অভিনন্দন জানান। সারা গ্রামের মানুষ এ খবরে আনন্দিত। তারা ভবিষ্যতে পড়াশোনা করে আরো বড় হোক এই কামনাই করি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category