1. almoazzintv@gmail.com : Moniruzzaman Monnu : Moniruzzaman Monnu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন

বোয়ালমারীতে মাটির গর্তে ভারসাম্যহীন রবিউলের বসবাস

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১
  • ৩৬৪ Time View

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

ফরিদপুরে বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের পশ্চিম চরবর্ণি গ্রামের মো. রবিউল মোল্লা (৩৫) নামে এক ভারসাম্যহীন যুবক বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর মাটির গর্তে বসবাস করছে। তিনভাইয়ের মধ্যে রবিউল বড়। সে ওই গ্রামের ভ্যানচালক মো. নুরুল মোল্যার ছেলে। রবিউলের মেঝ ভাই ইমরান মোল্যা ভ্যানচালক ও ছোট ভাই এনামুল মোল্যা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। শুক্রবার (৩০ জুলাই) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির চারচালা বিশিষ্ট পশ্চিম পাশে একটি টিনের ঘরে মাজায় শেকল লাগানো রবিউলের। প্রায় ৬ ফুট গভীর গোলাকার মাটির গর্তে হাত দিয়ে মাটি খুড়ছে। গত প্রায় ১৮ বছরের শেকল বন্দি জীবনে ঘরটির মাটির মেঝে হাত দিয়ে খুঁড়ে খুঁড়ে রবিউল নিজেই তৈরি করেছেন নিজের থাকার মাটির ঘরে রবিউলের হাতের নখ ও আঙ্গুল ব্যবহার করে তৈরি গর্তটি একটি গোলাকার বাংকারেই রূপ নিয়েছে। পরিবারের বসবাসে পরিত্যক্ত এই টিনের ঘরটি প্রায় ২৮ হাত লম্বা ও ৮ হাত চওড়া। পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, রবিউলের বয়স তখন প্রায় ৮ বছর। সে সময় তার জ্বর হয়েছিল। অসুস্থতার পর আস্তে আস্তে তাঁর হাত-পা শুকিয়ে যেতে থাকে। পরিবারের সাধ্যমতো কবিরাজ ও ডাক্তার সব দেখানো হলেও আর সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেনি সে। শীত-গরম কোন অনুভূতিই সে টেরা পায় না। শরীরে তাই কখনোই কাপড় রাখে না রবিউল।

রবিউলের বাবা মো. নুরুল মোল্লা বলেন, ‘রবিউল অসুস্থ্য হওয়ার পর তার ওজনের সমান টাকা ফেলেও তারে আর ভাল করতে পারি নেই। এহন আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিছি।’ তিনি জানান, শেকল খুলে দিলে রবিউল পুরো বাড়ি ভাঙচুর ও তছনছ করে। এদিক ওদিক হারিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে মনে না মানলেও প্রায় ১৭ বছর ধরে ওকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখছি।

রবিউলের ছোট ভাই ইমরান মোল্লা বলেন, ছোট বেলায় বড়ভাই আমাকে সাইকেল চালানো শিখিয়েছিলো। সে স্মৃতি আমি এখনো ভুলিনাই।

এ ব্যাপারে ময়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম বলেন, অসুস্থ রবিউলের বিষয়টি আমার জানা আছে। কিন্তু পরিবারটি কখনো আমাদের কাছে আসে নাই বিধায় কোন সহযোগিতা করা হয়নি। রবিউলের চিকিৎসায় বড় অংকের টাকা প্রয়োজন কিন্তু আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের এ ধরনের কোন তহবিল নেই।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে কথা হলে জানতে পারি রবিউলের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা আছে।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, ফেসবুকে শেকল বন্দি ওই যুবকের খোজ পেয়ে ইতিমধ্যেই ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পরিবারটিকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও সরকারি খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, এলাকাটি মধুতির নদীর পাশে এ উপজেলার শেষ প্রান্তে হওয়ায় ঘটনাটি আগে আমাদের নজরে আসেনি বা কেউ জানায়নি। পরবর্তীতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মানসিক ভারসাম্যহীন রবিউলের চিকিৎসায় বড় ধরনের অর্থ সহায়তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category